বৃহস্পতিবার, ৫ মে, ২০২২

উপলব্ধি সমগ্র - প্রেমদেবতা

০১

দাদার অনেক কথাই আমি বুঝতাম না। শুধু যে কথা বুঝতাম না, তা নয়। অনেক আচরণও খেয়ালি পনা লাগত। যাইহোক, বয়স বাড়ার সাথে সাথে বুঝতে পারি কিংবা পারছি। 
একটা আচরণের কথা বলি। দাদা যে সিগারেট টানে তার ফিল্টার সব সময় থুতুমাখা ভিজে থাকে। দাদা কখনোই দাদার সিগারেট চাইলে দিতেন না। সরাসরি ফিরিয়ে দিয়ে বলতেন আরেকটা ধরান। কখনো কখনো মানুষ ভেদে বলতেন, আরেকটা ধরান, লাস্টে দিয়েন থাকলে। 
আমার কাছে বিরক্ত লাগত। কিন্তু মজার বিষয় হল, আমি কি করে জানি। আমি জানি কারণ, আমাকে দিতেন। খুব কমই আমি নিতাম তার অর্ধেক টানা সিগারেট। আর আমায় হয়ত কিছু না ভেবেই দিতেন, হয়তো বা অন্তরংগের কারণেও। সেটা তিনিই ভাল জানেন। 
তবে আজ আমি উপলব্ধি পেলাম এক উপায়ে, আমিও সিগারেট অন্ধকারে আজকাল জ্বালাতে গিয়ে খেয়াল করে জিবের ছোয়ায় দেখে নিই ফিল্টার নাকি তামাক। কারণ প্রায়শই আমি সিগারেট ফিল্টার জ্বালিয়ে ফেলি। তাই বোধ হল, দাদা নিশ্চয়ই এটা টেস্ট করার জন্য ফিল্টার ভিজাতেন,আর তার থুতুর মাত্রা ছিল বেশি। তবুও দাদা, আমি চাইনা আপনার এ অভ্যাস দূর হোক। থুতু খাওয়ার অধিকার সবার হয়না। 


Warning advisory: ""Never believe in my eyes and stay away from my smile...""

বাজার - প্রেমদেবতা

নাম তার শাহজাহান মিয়া। পেশায় ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। বাংলাদেশের প্রায় যায়গায় তিনি ব্যবসা করেছেন। আমি যখন থেকে দেখেছি তখন তার ব্যবসা ছিল জুতার। ঢাকার সিদ্দিক বাজারে।কয়েকবার গিয়েছিলাম। যতবারই গিয়েছি ততবারই আলু বাজারে ডাক্তার দেখিয়ে আসার সময় আব্বুর সাথে দেখতে গিয়েছিলাম। আসার সময় তিনি আমাকে নতুন ডিজাইনের জুতা আর ১০০ টাকা দিতেন। এই ১০০ টাকা মানে ৯৬-৯৭ এ অনেক কিছু।

যাইহোক একবার উনার সাথে আমার বাজারে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। এক রিক্সায় উঠার পর, উনার বসার স্টাইল এর কারণে আমার বসার যায়গাই ছিলনা। কোনমতে দাঁড়িয়ে রিক্সা ধরেছিলাম। তার উপর আবার তিনি বাজার যাওয়া অব্দি কয়েকবার রাস্তার লোকজনদের রিক্সা দাড় করিয়ে গল্প জুড়ে দিলেন। মুখে বলছেন তার তাড়া আছে কিন্তু গল্পের আবহ তা বলেনা।

কয়েকদফা তিনি রাস্তায় সালামের উত্তর দিতে দিতে অবশেষে আমরা বাজারে পৌছালাম। বাজারে পৌছে তো তিনি বাজার কিনে না কিছুই। খালি ঘুরে।

আর কয়েকজন দোকানী ডাকছে, কাকা! আবার কেউ কেউ মিয়া ভাই বলে। শাহজাহান মিয়া ঝাড়ির স্বরে বলে - মানুষ হ। এমনে করলে লোকজন ভাল করবেনা। বাড়িতে আজ ঈদ লাগছে, দাম কমায়ে ফ্রেশ দে কিছু।

দোকানীঃ কি কন কাকা, আপনের কাছে কমায়েই রাখি, যে কম দিয়া ২ নং মাল ধরায়ে দেয় হেইডা তো কাকা বুঝেননা। চেইতেন না, ভালা ডাই দিমু।

“ওই কাকারে সপ্তাহে শুকনা বাজার রেডি কর”

কথা গুলো কিন্তু দাঁড়িয়ে হচ্ছেনা, হাঁটার মধ্যে হচ্ছে। আমি শাহজাহান সাহেবের পিছু পিছু এবার সবজির এরিয়াতে ঢুকলাম। তিনি সবজির দিকে, এক বয়স্ক দোকানীর কাছে গিয়ে বসল। কিন্তু কথা শুরু করল পাশের ব্লকের মাছের দোকানের কোন এক দোকানদারের সাথে। জানতে চাইলেন, বাজারে স্পেশাল কোন মাছ আছে আজ।

দোকানী কারো একজনের নাম বলে, শেষে নিজের দোকানের ফ্রেশ মাছের রিকমেন্ড করল। মিয়া সাহেব মুখ ঘুরিয়ে সবজির বুড়াকে বলল, ঘরের তরকারি কি কি আছে।

বুড়া, মিয়া সাহেবকে বুঝাতে শুরু করল, শিমটা তার ঘরের গাছের।

মিয়া সাহেব ঝাড়ির স্বরে বলল, মইরা যাইবি মিছা কথা ছাড়ছ না কেন।

বুড়াঃ তুমি কি কও, বাড়ির বোগলে জলিলের চিপাটায় হইছে।

বলতে বলতে মাপতে শুরু করল।

মিয়া সাহেবঃ তুই আমারে যায়গা চিনাস। তোর বাড়ি ঘর আছে নি। আলা কিপটামি করিস না চুসির পো। পোলায় কামদাম করে আজকাল?

বুড়াঃ কিয়ের কি।

মিয়া সাহেবঃ এক কাম কর, বিয়া করাই দে। নাইলে অন্য বেডির দিকে চোখ দিব। পরে আরেক জ্বালা। আর তুই মাপতাছোস কে?

বুড়াঃ আরে ফ্রেশ জিনিস। চাচীরে কইয়ো আমি দিছি। খাইয়া আলা দাম মন চাইলে দিও।

মিয়া সাহেবঃ এতো দিতাছোস কে? আমার আইটেম বেশি লাগব। ১০ পদ না হইলে তোর মতন ফকিন্নি লাগে। মেহমান আইছে।

বুড়াঃ আমু নি।

মিয়া সাহেবঃ রাতে আইয়া পরিস। আর মাছের বাজার কেমন?

বুড়াঃ চড়া। মাছ আহেনাই আজ।

মিয়া সাহেব বাজার না নিয়ে উঠে পড়লেন। মাছের ব্লকে ঢুকলেন। আর আমার হাতে খালি চটের ব্যাগ। আমি বিরক্ত হচ্ছি। আসলে সে একই জিনিস কয়েক দোকানে গিয়ে খোজ করছে আর না নিয়ে উঠে আসে। প্রায় সবাই প্যাক করা শুরু করছে। একবার ভাবছি একই জিনিস এতো দোকানে বলে বলে আসার মানে কি? আর সবাইকে কুশলাদি জিগ্যেস করছে আর কাউকে কাউকে গালিগালাজ করছে। অবাক করে দিয়ে কেউ কেউ হেসে উড়ে দিচ্ছে। আর ফোর্স মার্কেটিং করছে। যাইহোক সবার প্রথমে মাছ কেনা হল। সে মাছ কিনতে প্রায় ২০ মিনিট কথোপকথন হল, এর মধ্যে অনেকেই মাছ নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মিয়া সাহেব যেই মাছ নিয়ে দর কষাকষি করছেন এটা কেউ কিনছেনা। যদিও কয়েকজন অপেক্ষা করছে কেনার জন্য। আমি অবাক হয়ে দেখলাম রাজবংশী একটুও বিরক্ত হচ্ছেনা। সর্বোচ্চ কম মূল্যে মাছ কিনে তিনি যখন বড় মাছটি নিয়ে এবার সবজির দিকে ঢুকলেন সবার কাছ থেকেই কমিয়ে কমিয়ে একই জিনিস কম মূল্যে নিলেন। সবাই সবারটা জানে। বিষয়টি যেন ওপেন সিক্রেট যেন। প্যাকেট করা জিনিস আবার কারো কারো থেকে কমাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার মিয়া সাহেবকে বেশি ধরিয়েও দিচ্ছেন। সেটা তিনি মেনেও নিচ্ছেন।

মোড়ে এক রিক্সার দিকে তাকাতেই সে হাত তুলে দিয়ে এগিয়ে এসে বাজার তার রিক্সায় তুলে নিল। আমি চুপচাপ দেখলাম আর মিয়া সাহেব মিঠাইওয়ালার সাথে গালিগালাজ বন্ধুত্বের স্বরে কথা বলতে শুরু করল। বাজার রিক্সায় তুলে রিক্সাওয়ালা দাঁড়িয়ে ছিল।

মিয়া সাহেব ঝাড়ি দিয়ে বলল- চুরি করবি নি?

রিক্সাওয়ালা হেসে লজ্জা পাইল।

মিয়া সাহেবঃ যা বাড়িত দিয়া আয়। মায় বইয়া রইছে। মেহমান আসছে। খাড়ায় রইছস কেন? আমি আইতাছি।

রিক্সা ওয়ালা চলে গেল। আমরা আরেকটা রিক্সা ধরে মিঠাই বিনে টাকায় নিয়ে, রওনা দিলাম। আসার সময়, যাওয়ার পথের এক লোক ফের রিক্সা থামিয়ে বলল- কাকা বাইরের লোক আইয়া যদি গেরামে আইসা অশান্তি করে হেইডা কি সহ্য করা যায়। ভদ্রলোক হইলে এক কথা। এইডাই মূল বিষয়। আপনেরা জানেন কি করবেন অহন।

মিয়া সাহেবঃ বাড়িতে মেহমান আইছে রাইতে আইয়া পরিস।

লোকঃ কাকা আকিজ বিড়ি খান তো, তাইনা।

দাদা এবার রিক্সাওয়ালাকে বলল- যা যা।

এই শাহজাহান মিয়া আমার দাদা হন। আমার বাবার বাবা।

আমি বললাম- দাদা তুমি ঘুষ হিসেবে বিচারের জন্য বিড়ি নিবা?

দাদা পকেট থেকে বিদেশি স্টাইলের লাইটার বের করে সানমুন সিগারেট ধরিয়ে বলল- এই ফকিন্নি আমারে কি খাওয়াইবো। রাতে ভাত খাওয়াইয়া বুঝায়ে দিমু। তার বাপেরেও আইতে কইছি।

আমি জানিনা দাদা বিচারের পরবর্তী গল্প। তবে সেদিনের সব তরকারি গুলো বড়মা মানে দাদার মা অনেক মজা করে তার নাত নাতি, পুতিদেরও খাওয়ালো দুপুরে। আর বড়মা দাদাকে বলতেছিল, ব্যাটারা তোরে ভালা মন্দ মিশায়ে দিছে। দেখে আনবিনা। কতগুলা সবজি সাইদের মারে দিয়া দিছি। বউ পোলাদের এটি খাওয়ানের জন্য বাইত আনছোস।

দাদা বলতেছে বড়মাকে- বাজারে বারো কিছিমের মানুষ। দু’একটা চিটারি করেই খায়। আরেকদিন বুইজা আনুম নি।

#সৃষ্টি

#premdevota #perspective

Warning advisory: ""Never believe in my eyes and stay away from my smile...""

সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০

সম্পর্ক - প্রেমদেবতা

অল্প করে হল গল্প
স্বল্প সময় বিনিময়।
সৌজন্যে আমন্ত্রণ,
তোমার আমার কানেকশন। 
তোমায় ছুইলে আপন করে
পাহাড় সমান অধিকার জাগে।
তুমি আমার চুপকথার
রাত জাগা রূপকথা।
অনেক অভিমানের মিথ্যে অভিযোগে 
আমি তোমার অজানা ভালবাসা।

( দিনটি ছিল ২০১৯ এর কোন এক অপরাহ্নের একটু খানি উঁকি দেয়া সুখ। আমি বসে ছিলাম আড়াল করে স্বভাবতই। তুমি এলে, ফের চলে গেলে। ব্যস, এটুকুই।)

এরপর, 
এরপর তুমি চললে
শহরতলীর পথের ভীড়ে।
আমি হারাই সেই ভীড়ে,
তোমার ঘ্রাণে পিছু ধরে।
তুমি আসো তুমি যাও,
দোলা দিয়ে আমায় যাও।
হেসে খেলে, ভেসে যাও
আপন করে ভরিয়ে দাও।

(তারপর, মাঝেমধ্যে আমি তোমায় হাসাই কাদাই। তোমার অবাধ্যে স্বপ্ন সাজাই। ভুলে যাই, অধিকার পাই। অধিকারে ভীষণ অবেলায় পালিয়ে বেড়াই।)

এই হল তোমার আমার
না বলা না কথা।
তুমি হও আঁখি মোর,
স্বপ্ন ঘোরের প্রেমিকা।
ভালবেসে যাই, তাই
ভালবেসে সুখ পাই।
অবাক সংসারে হাওয়াই মিঠাই,
প্রতিসন্ধ্যায় তোমার কন্ঠ শুনতে চাই।

Warning advisory: ""Never believe in my eyes and stay away from my smile...""

রবিবার, ২১ জুন, ২০২০

অভিযোগ - সিন্থিয়া আহমাদ



একটা সময়..
কবিতার বিপরীতে কবিতা হতো,
চার লাইনের বিপরীতে দু'লাইন হলেও হতো।
একটা সময়
অনুভূতিরা ঝাপসা হতো না।
ছন্দহীন কথাগুলোও ছন্দে বলার চেষ্টায়
দৌড়ে উঠোন পেরুতো, হাসির আলোড়নে।।
একটা সময়
ঘুম না হওয়া রাতগুলো মুঠোফোনে কেটে যেতো,
নতুন কথা জানতে বারবার ফিরতে ইচ্ছেও হতো।
একটা সময়!!!
বদলে যাওয়া সময় বলে ওঠে,
এখন দিন কাটে ব্যস্ততায়-
কথার মুহূর্তগুলো ভুল ধরার রঙে।
এক জনের কষ্টের বানীতে অন্যজনের
হাসির অনুভূতি প্রকাশে।
প্রযুক্তিকে মনে মনে ধন্যবাদ দিয়ে সব অভিমান
বিষ হয়ে উগলে দিয়ে আনন্দ পাওয়ায়।।

এখন দিন কাটে-
একজনের শবযাত্রার সাদা কাপড়
অন্যজনের হাসিমুখে উপহার পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে।
এখন দিন কাটে-
তিক্ততাকে ফেরত উপহার দিয়ে।।
এখন দিন কাটে-
স্বপ্নচারীনির যুদ্ধের দেবী হয়ে ওঠার গল্প লিখে।
রক্ত আর ক্ষত ছাড়া যার
পিপাসা মেটেনা।।
দেবতা, নারী সবসময়ই শক্তিশালী
বুকে তুলে নেওয়া নারী যখন ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার
তিক্ততা মাথা পেতে নেয়।
জেনো ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া তুমিই শিখাও তখন-
জেনো কোমল স্বপ্নচারীনিকে
তুমিই শিখিয়েছিলে রক্ত ঝরাতে আনন্দ নেয়া।

Warning advisory: ""Never believe in my eyes and stay away from my smile...""


অভিযুক্ত করার নিপুণ কৌশল আর অধিকার, 
তুমি সঠিকভাবে আয়ত্ত করেছ।
কথার পিঠে উত্তম জবাব,
আর কুয়াশার মত ধরাছোঁয়ার বাইরের
এক নিজস্বতায় আপনাকে সাজিয়েছ,
এক যুগের এই সময়টায়। 
তুমি জানো, দেবতা অসুরের সম্পর্ক, 
তুমি সেই দেবতাকে নিজের আলিংগনে পরাস্ত করে, 
অন্তঃরালে হাসো শয়নকালে।
বরং তুমি জানো দেবতা তোমার এক শব্দে গড়ে ভাংগে।
সেই তৃপ্ততায় বরং তুমি সীমাহীন অহংকারীর আসনে নিরহংকারী।

শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯

প্রেমদেবতা

একের ভেতর দুই জনা,
নাকি দুইয়ে মিলে এক।
জগত সাজিয়ে বিধাতা
খেলিছে এই মিলন মেলা।
তুমি আমি বিপ্রতীপ হয়ে
জ্যামিতিকধারার প্রণয়ে,
আপন হয়ে প্রতিভোরে ত্রিভুজ
নিয়মে আঁকছি প্রেম।


কেউ কি জানি কি সুখে
রাত হয়েছে আপন মোর?
দিনের আলোয় হাসছি আমি
ভালো থাকার সন্ধানে।

মাঝেমাঝে নিও তুমি,
নিও আমার খবর।
ইচ্ছে হলে চিৎকার করে
আঁকড়ে রেখো এই আমারে।

ভাসছি আমি ডুবছি আমি,
ক্রোশের পর ক্রোশ।
আক্রোশটাকে মায়ারথ করে
দিও নরম চুম্বন।
Warning advisory: ""Never believe in my eyes and stay away from my smile...""

বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০১৯

বিশ্বাসঘাতকতা - প্রেমদেবতা


আমি বিশ্বাস করি বিশ্বাসঘাতকতায়,
মানব জীবনের সবচেয়ে অপছন্দের কাজ,
তবুও কত নিপুনভাবে আমাদের অস্তিত্বে জড়ান।
------------------------------------------------

"আমার ভালোলাগে -
বিশ্বাসঘাতকতার সাথে সংসার সাজাতে।
আমি খেলা করি বিশ্বাসঘাতকতায়।
ভাললাগে দেখতে, মেয়েটি কত বিনিদ্র
আঁধার কাটায় বিশ্বাসঘাতকতায়।
ভাললাগে মেয়েটির নির্বোধ কান্নার আর্তনাদ।

কোন উত্তর নেই বিচ্ছেদের
কোন ভাষা নেই বিশ্বাসঘাতকতায়।
মেয়েটি দিকবিদিক হারায়
অজানা ক্ষোভে।
ভাল লাগে, ভাল লাগার মাঝেও
কাছে টানার অনুভূতি থাকে।

মেয়েটি নিঃশেষ হয়ে যায়
তিলে তিলে, তবুও হাসির মাঝে বাঁচে।
আমার ভাললাগে বিশ্বাসঘাতকতায়
আমি খুঁজেছি প্রিয় তোমাকে।

আমি জিতেছি বিশ্বাসঘাতকতায়
তাই বলি সংগী হবে কি জীবন তরীতে।"

Warning advisory: ""Never believe in my eyes and stay away from my smile...""

বুধবার, ৬ মার্চ, ২০১৯

বিচ্ছিন্ন গল্প - প্রেমদেবতা

০১

রবীন্দ্রনাথ নারীর মন বোঝেনি,
আর তুই বুঝবি কেমনে?
নারীর যত ছলাকলা,
চোখ খুলে দেখবি
নারীর যত রঙ তামাশা
মুখ বুঝে সইবি।
সে কাছে আসতে যাবে-
ইংগিত ইশারায় চোখ নাচাবে
প্রেম প্রেম খেলায় মন ভোলাবে।
পারলে তুই নজরুল হবি
না পারলে নারীর গল্প
রঙিন নেশায় চাপা দিবি।


০২

তোমার মনে আছে, সেই অপরাহ্নের কথা? 
তুমি আমি মিশে গিয়েছিলাম 
সব ভুলে আত্নিক সুরে। 
মনে আছে, তপ্ত দুপুরে 
তুমি ছুয়েছিলে আমার তনুমন!! 
আর আমি প্রমত্তা কীর্তিনাশা হয়ে 
আকড়ে ধরেছিলাম স্বর্গীয় ভালবাসায়। 
মনে আছে কি সেই মার্চ মাসের 
দ্বিচক্রযানের অভিযান? 
তুমি সবটুকু বিশ্বাসে 
আমার শার্টের বুক টেনে ধরেছিলে। 
যেমনটা বাজ পাখি ছু মেরে 
ঊড়ে যায় নীলাম্বরে। 
হ্যা, তুমিই ছিলে 
আর ছিল আমাদের দুচোখ ভরা স্বপ্ন।

০৩.

ঘুম নাই বেশ কয়েকদিন হল।
প্রিয়জনের বাধ্যতামূলক শয্যায়।
কি করে হবে শান্তির ঘুম,
ঘরের হাসি যে পত্রঝরার মত শুকিয়েছে।

০৪.

আমার ভীষণ খারাপ লাগে
যখন তোমার জন্য লেখা
অনাদরে পড়ে থাকে।
আমার খারাপ লাগে,
আজিমপুরের গলিতে পদচিহ্নের
ছাপ গুলো হারাচ্ছে বলে।
খারাপ লাগে, ভুলের পরে
শাসনহারা হয়েছি বলে।
আমার ভীষণ খারাপ লাগে
প্রদীপ জ্বেলে আমায় খোজনা বলে।
খারাপ লাগে খারাপ লাগে
মৃত্যু যন্ত্রণায় বেচে আছি বলে।
খারাপ লাগে, জীবনের বাকে
মিথ্যে আয়োজনে থাকতে।
খারাপ লাগে জড়িয়ে ধরে
চিৎকার করে কাদতে পারিনা বলে।


০৫.

অতঃপর অপরাহ্নের চোখাচোখি
চুপ থেকে আবেশিত অনুভূতি।
অসমাপ্ত বিদায়ে রেখেছি প্রেম
তোমার ওই দৃষ্টিপানে।

০৬.

অরণ্যচারীর ঘর যেমন খোলা আধার
স্বপ্নচারীর চোখ তেমনি চকচকে।
আর নির্লিপ্ত হাসির আবেশ
ঠোট জুড়ে অর্ধচন্দ্রাকার প্রেম হয়ে রয়।

কাছে গেলেই চুম্বকের মত
আঁকড়ে ধরে, ঝোকের মত
চুষে নেবে উষ্ম নরম প্রেম।

০৭.

তোমায় ভালবাসি বলেই তো,
দুরত্ব হলে চিনচিনিয়ে ব্যথা বাড়ে।
কোলাহলে ফুটে ওঠেনা,
নিরবতায় আকড়ে ধরে।
হে শহর তুমি আমার সব
দিয়ে কেড়েছ আবার সবই।
প্রতারক প্রেমের মত
তুমিও করে দিচ্ছ দূর পথগামী।


০৮.

বলোনা কেন তোমার মুখটি
চাঁদের মত স্নিগ্ধ জোছনাকুমারী?
বলোনা কেন আমি অভিশপ্ত তোমায় ছুঁইতে,
বলোনা কেন তারাগুলো তোমার
শরির ছুঁইলে আরো উজ্জ্বলতা পায়,
বলোনা এমন বর্ষণ সন্ধায় কেন,
আমি তোমায় আকুলতায় চাই।
তোমার হাসিতে ঠোটের উষ্মতায়
কেন এমন অস্থিরতা জাগায়।
বলোনা কেন তুমি আমার স্বপ্নঘোর হয়ে
লালপানির ঝারে হাসো পরম ভালবাসায়?
তোমার প্রেমে মত্ত, মত্ত আমার অস্তিত্ব
দিনের পর দিন তোমার শুদ্ধ আবেগে।
আমি তোমার মাতাল প্রেমিক,
তুমি দেবী আমার হৃদয় প্রতিমা।


০৯.

লালপানি আমি তোমায় ভালবাসি
তোমায় বিনে খুব কষ্টে কাটে আমার দিনপঞ্জিকা।
লালপানি তুমি আমার সেরা সুখ দেবীবিনে।
লালপানি তোমায় নিয়ে মরিব হাতে
ধ্রুম্রশলাকা নিয়ে ১৯ ডিসেম্বর ভোর রাতে।

১০.

আমি বিসর্জিত দেবতা।
নতুবা মনুষ্যচরিত কেউ।
স্বপ্নচারিনীর অপ্রিয়,
আবার সাঝপরীর শ্রদ্ধানন্দ কেউ।
আসলে আমি প্রেমদেবীর অহংকার,
স্বরস্বতীর সৃষ্ট সুদখিনার পাপাই।

১১.

প্রেমের জ্বরে তুমি আক্রান্ত
আমি যে ম্যালেরিয়ায়।
তুমি খোঁজ নাপা,
আমি খুঁজি ফ্যালাজিন।
প্রেম বুঝতে তুমি বান্ধবীর বয়ফ্রেন্ড দেখো,
আমি খুঁজি রবি ঠাকুর।

১২.

তুমি ভেবনা তোমায় ভুলে আমার জীবন যাপন।
তুমি আছো অস্তিত্বে মিশে।
তুমি ভেবোনা, তুমি ভাবনাহীন,
তুমি তো আমার ছন্দে বাধা কবিতা।
তুমি ভেবোনা তুমি অতীত,
তুমি সদা জাগ্রত শ্রেষ্ঠ দেবী।
তুমি ভেবোনা আমি সুখে আছি,
আমি সুখী তাও তোমার বিচূত্যে আমি অধীন।
ভালবাসি সুদখিনার কসম
ভালবাসি সাঝপরীর শ্রদ্ধায় তুমি যেমন।

১৩.


এই গল্পটা আমার তোমার,
সংগোপনে কাছে আসার।
কি জানি কোন টানে,
আবেগ এসে তোমার তীরে ভিরে।

এই সময়টা তোমারও চেনা,
কাছে চাইলেও দূরে রাখো।
এই গান এই কবিতা,
তোমার আমায় রচে
অস্বীকৃত প্রেমে।

তুমি বুঝেও না বোঝায় থাকো,
আমি বুঝতে গিয়েও অবুঝ সাজি।
তাই রোজ রাতে তোমার হয়ে
আমি দুরত্বের মাঝে ভাসি।

১৪.

কেউ সুখে নেই,
দরজার ওপাশের
সরল মুখটিও সুখে নেই।

নাটাই ঘুড়ির দুরত্ব নয়,
অনুশাসনের ফলাফলে
কেউ সুখে নেই।

তুমি ঘর ছেড়ে ঘরে গেলে,
আমি ঘর ছেড়ে যন্ত্রণালয়ে গেলাম।
তুমিও অভাবে খোজ আঁকড়ে ভালবাসা।
আমি ধারণ করি তোমায়, নিয়ে যন্ত্রণা।
তুমিও আছো আমিও আছি
বিশ্বাসের যায়গায় দুজনেই কাদি।
তুমি দোয়া দিয়ে যাও আমায়,
আমি আশীর্বাদে রাখি তোমায়।
কিচ্ছু করার নেই তোমার আমার,
উন্মুক্ত হোক ধর্মপথ সবার।

১৫.


আমি একটা প্রেমিকা চাই।
যে আমায় নিয়ে খেলবে,
মাধুরীর চাহুনি আবেগে।

আমি একটা প্রেমিকা চাই,
যে বুক জড়িয়ে গাইবে-
আমিতো তোমার চিরদিনের
হাসি কান্নার সাথী।

আমি এমন এক প্রেমিকা চাই,
যার কথার শ্রোতা হয়ে লিখব কবিতা।
আকাশে জাগবে পূর্নিমা
জোনাকিরা নাচবে বিহ্বলিত হয়ে।
এমন প্রেমিকা চাই,
যার দুরত্ব পথের মাপে না হয়ে
মনের টানে হবে আপনাতে।

১৬.

কন্যা এসো তোমার সাথে
ওপেন্টি বায়োস্কোপ খেলি।
কন্যা তোমার সাথে এসো
ছক বাধা জীবনের বাহিরে ভাবি।
কন্যা এসো তোমার সাথে অতৃপ্ত
প্রতিটা সকালের দুষ্টুমি কাটাই।

১৭.

তোমরা নাহ তুমি, হ্যা তুমি;
আমায় কবি ভেবে আমার কথা গুলোকে
বড্ড অবজ্ঞা করো।
বিশ্বাস করো আমি সাহিত্য জানিনা।
এই বিষয়টা নিয়ে ভাবিনি কভু,
যদি ভাবি তবে শব্দ চয়নে বিষম খাব।
যাকগে ওসব কথা বরং বলি তোমায়
আমি তোমায় সত্যি বলছি,
ভুলের অভিমানী হয়ে কি লাভ লক্ষীটি?
আমি যে বড্ড অসহায় এই একলা রাতে!

তুমি যা চেয়েছ, আমি বুঝিনি
তুমি যে আবদারে নিজের ভেতর পুড়ছ,
আমি তো সেই প্রতিদানের বেলায় ভিখারি।
যদি পারো খানিকটা আমার হয়ে একটু হাসবে?


১৮.

আমি দেখছি তোমার নাভির সৌন্দর্য,
ছুঁয়ে দেখিনি অদ্যম ইচ্ছেতেও।
সাহস নাকি সুযোগের অভাবে,
আজো রহস্যময় সেই মুহুর্ত যে।

১৯.

সমুদ্র, আমি দিনের আলোয়
তোমার কাছে আসিনা।
কেন জানো তো?
জানি, বলবে না।

আমার কাছে থেকে তোমার শুনতে
ভীষণ ভালোলাগা কাজ করে।
আচ্ছা, থাক তবুও বলি।
দিনের আলোয় হাজারো মানুষের কোলাহলে
বিলীন হয় তোমার আহাজারি।

তাই আমি মধ্যরাতের পথচারী
এসেছি তোমার তটে।
তোমার কান্না শুনবো বলে
একান্ত নিভৃতে।

সমুদ্র, তুমি কি দেবী চৌধুরানীর মত
কূল খুঁজে বেড়াও?
হ্যা, তাইতো দেখছি
তুমি আছড়ে পড়ছ তীরে।

অথচ দেখছ না,
তটে বসে আছি আমি দেবতা।
আমি আজ ঘুমাইনি।
আর ঘুমাইলেই কি বা আসে যায়,
স্বপনে তো তোমার সাথে চিঠি লিখিই।

তুমি আর আমি পার্থক্য কোথায়?
হয়ত একটাই, তুমি বিশাল আর আমি ক্ষুদ্র।

২০.

তোমার বুকের অন্তর্বাসের নিচে
যে কষ্ট লুকিয়ে আছে,
আমি সেই কষ্টের সুখ হব।

২১.

পানশালার অন্ধকার আয়োজনে,
প্রতি সাঁঝেরবাতি জ্বলে লালপানির চুমুতে।
সিগারেট হাতের ছেলেটি গুমরে লুকায়,
অপূর্ণতার রিক্ত হস্তে কষ্টলভ্য উম্মাদনায়।

ছেলেটি ভালবাসা চায়,
কারো বুকের আবেগে স্নান করিতে চায়।
সারা দিবা ব্যস্ততায় কাটায়,
সাঁঝের প্রদীপ্ত নিকষায় শুধুই
প্রেম চায়, তৃপ্ত বিশ্বাসে।

২২.

এই সেই বেলা
যার স্নেহনিলয় ভরে ছিল
আমাদের চঞ্চল হৃদয়।
আমি রোজ না হলেও
আসি ফিরে বারবার পাইতে
তোমার ঘ্রাণ।

২৩

কতদিন হলো বলোতো দেখি,
তুমি বলতে পারবেনা...
কারন অপেক্ষার ক্যালেন্ডার
আমি প্রতি রাতে গুনে রাখি।

তুমি ভাল আছো?
কি করছ, ঘুমিয়ে আছ?
নাকি কারো কাঁধে মাথা রেখে
জোছনা স্নান করছ!
আমি খুব ভাল আছি,
তোমার গল্প করে সুখেই আছি।

আমি সত্যিই ভাল আছি,
মনের মাঝে শান্তি অনুভব করি।
মাঝে মাঝে ইন্দ্রানী সেনের গান শুনি,
কখনও সুমনের মত বলে উঠি,
ও গানওয়ালা আরেকটা গান গাও
আমার আর কোথাও যাবার নেই-
কিচ্ছু করার নেই...

২৪.

এমনি করে কেউ কাছে এসে
কপালে প্রেম একেঁ,
বিষণ্ণতায় ডুবিয়ে
আঁধারের ঘুম হয় বিলীন।


এমনি করে বিশ্বাসটা ভেঙ্গেচূড়ে
হয়ত আমারই মত ভুলের ফাঁদে
নিষ্পাপের আঁড়ালে নষ্ট করে জীবন।

তোর বাড়ির পথে যত কবিতা
তোর ঠিকানায় ফেরত আসা---
আমায় বুঝাতে, ভুল ভাঙ্গাতে
কত কথা স্তবদ্ধতায় রয় পড়ে।

যেদিন ভুল ভাঙবে বুঝতে শিখবে
আবেগ বাস্তবতার কিঞ্চিৎ ব্যথা।
সেদিন আমি হব মহাপুরুষ তোমার
কান্নার জলের চোখের পাপড়ির আচঁড়ে।
ক্যানভাসে রাখবেনা ধূলোর ভয়ে
বুক পাঁজরের ভাঁজে আঁকড়ে নিবে
স্তব্ধতার দিক্বিদিক চিৎকারে।

২৫.

জানালার পর্দাটা যখন দমকা হাওয়ায়
উড়ে যায় লাজুকতায়,
ফাঁক গলে সোনালী আলোয়
তোমার ঘুমন্ত রহস্যময়ী মুখটা
নিষ্পাপের ছোঁয়ায় মায়াবী হয়ে উঠে।


আমি কল্পনার সব খেলায়
উত্তেজিত হয়ে যাই
তোমাকে কাছে পাবার অহংকারে।

আমি স্পর্শে প্রেমের আবির মেখে যাই,
তোমার দীপ্তিময় চোখের পাতায়।
ছুঁয়ে যাই তোমার কপল হয়ে,
ঠোঁটের নরম তিলে।

তুমি নড়ে চড়ে ধীরে চোখে
স্থির দৃষ্টিতে তাকাও মোর পানে।
আমি কাছে থেকে কাছে এসে
নাকে নাক ছুঁয়ে বলছি তোমায়
তোমাকে ভালোবাসতে চাই...


Warning advisory: ""Never believe in my eyes and stay away from my smile...""

খেয়ে পড়ে বেঁচে আছি।

 এই আকাশটা দেখেছ?  সবুজের উপর নীল পাখি ওড়ে সারি সারি। পুকুর ধারের বাড়ি যেন সবুজের মাঝে আড়ি। তার মাঝে চিলেকোঠায় আমি! আধুনিক এক প্রাণী।   দেখছ...