সোমবার, ২৬ জুন, ২০১৭

ভালবাসতে সবাই জানে, জানেনা ভালবাসা কি - প্রেমদেবতা

আবেগ অনুভূতি পৃথিবীর সৃষ্টিলগ্ন থেকে একই রকম। স্থান, কাল ও পাত্র বিশেষে ভিন্ন মাত্রা পায় শুধু! আবেগ নিজস্ব অনুভূতি ও নিজস্ব ধ্যান ধারণার বহিঃপ্রকাশ। সকলের আবেগ একই রকম; প্রকাশ ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে। আবেগের সাধারন জনমত হল ভালবাসা।

আর এই ভালোবাসাই একটি মানবিক অনুভূতি এবং আবেগকেন্দ্রিক একটি অভিজ্ঞতা। বিশেষ কোন মানুষের জন্য স্নেহের শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ভালোবাসা। তবুও ভালোবাসাকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাগ করা যায়। আবেগধর্মী ভালোবাসা সাধারণত গভীর হয়, বিশেষ কারো সাথে নিজের সকল মানবীয় অনুভূতি ভাগ করে নেওয়া, এমনকি শরীরের ব্যাপারটাও এই ধরনের ভালোবাসা থেকে পৃথক করা যায় না। ভালোবাসা বিভিন্ন রকম হতে পারে, যেমন: নিষ্কাম বা প্লেটোনিক ভালোবাসা, ধর্মীয় ভালোবাসা, আত্মীয়দের প্রতি ভালোবাসা, কামোদ্দীপক ভালোবাসা, পারিবারিক ভালোবাসা, প্রেম (মনোবিজ্ঞানী চার্লস লিন্ডহোমের সংজ্ঞানুযায়ী রোমান্স হল "একটি প্রবল আকর্ষণ যা কোন যৌন-আবেদনময় দৃষ্টিকোণ হতে কাওকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে তুলে ধরে, এবং যাতে তা ভবিষ্যতে দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার মনোবাসনাও অন্তর্ভুক্ত থাকে।" কোন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এতে অপর ব্যক্তির প্রতি একইসাথে শক্তিশালী মানসিক বা আবেগী এবং যৌন আকর্ষণ কাজ করে। দাম্পত্যের ক্ষেত্রে রোমান্সে বা রোমান্টিক সম্পর্কে প্রায়শই যৌন আকর্ষণের তুলনায় ব্যক্তিগত আবেগ ও অনুভূতি অধিক গুরুত্বের অধিকারী হয়।)

ইত্যাদি। আরো সঠিকভাবে বলতে গেলে, যে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর প্রতি অতিরিক্ত স্নেহ প্রায় সময় খুবই আনন্দদায়ক হতে পারে... এমন কি কোনো কাজ কিংবা খাদ্যের প্রতিও। আর এই অতি আনন্দদায়ক অনুভূতিই হলো ভালোবাসা।

ভালবাসাকে কয়েকটি দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করা যায়। যেমন ভালোবাসা (গুণ), মানবিক বন্ধন, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ ও ভালোবাসার দর্শন।

সাধারণ মতে, ভালোবাসাকে একটি ব্যক্তিগত অনুভূতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেটা একজন মানুষ অপর আরেকজন মানুষের প্রতি অনুভব করে। কারো প্রতি অতিরিক্ত যত্নশীলতা কিংবা প্রতিক্ষেত্রে কারো উপস্থিতি অনুভব করা ভালোবাসার সাথেই সম্পর্কযুক্ত। অধিকাংশ প্রচলিত ধারণায় ভালোবাসা, নিঃস্বার্থতা, স্বার্থপরতা, বন্ধুত্ব, মিলন, পরিবার এবং পারিবারিক বন্ধনের সাথে গভীরভাবে যুক্ত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সম্পর্কসমূহের সূচনাপর্বে প্রেমের অনুভূতি অধিকতর দৃঢ়ভাবে কাজ করে। তখন এর সঙ্গে এমন এক অনিশ্চয়তা এবং দুশ্চিন্তা অনুভূত হয় যে এ ভালোবাসাকে হয়তো আর কখনোই ফিরিয়ে আনা যাবে না।

ভালোবাসা একটি আপেক্ষিক ব্যাপার। কিন্তু ভালোবাসা একই রকম। কষ্ট একই রকম। আনন্দ একই রকম। তাহলে কেন অপরপক্ষ ঠিক আমার মত করে বা আপনার মত করে আপনাকে অনুভব করতে পারে না? প্রকাশ করতে পারে? তাহলে বলা যায় ভিন্নতা কিছু না কিছু আছেই। সেই ভিন্নতা দৃষ্টিশক্তির, চেতনার, বোধের। একই বিষয়কে ভিন্ন ভিন্ন জ্ঞানে, ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে ভিন্নতর ভাবে প্রকাশ করা হয়।

ধরুন কোন প্রেমিক পুরুষ তার কিঞ্চিত প্রেমিকা ভালোবাসার কথা বলতে পারছে না কোন ক্রমেই। কারণ বলতে গেলে আসছে ভিন্ন রকমের বাঁধা! আসলে কি সে বাঁধা! সময় অতিক্রান্তের?

"আমার মত করে আমাকে কেউ না বুঝলে আমার খুব কষ্ট হয়, নিজেকে মানাতে পারি না। তুমি খুব ভালো করেই জানো আমি তোমাকে ভালোবাসি, ভালোবাসি অনেক কিছুই। কিন্তু তুমি খুব ভালো করেই ফিল করেছ আসলে আমি তোমাকে কিভাবে কি রকম ভালোবাসি। কিন্তু তুমি কিছুই বলতে নারাজ।

মনে আছে একদিন তুমিই বলেছিলে আমি সিদ্ধান্ত নিই, সেদিন কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নিই নি। কারণ আমি জানতাম ভালোবাসার বা অধিকারের সম্পর্কে একক সিদ্ধান্ত অকাম্য। আর যদি অধিকারের কথা বলি তাহলে অপরদিকেই ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। তার জন্যে দরকার সুষ্ঠু মস্তিষ্কের ঐক্যমত্যের সিদ্ধান্ত; আসলে কে কতটুকু ছাড় দিচ্ছি বা দেবো। কিন্তু আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পেরে জটিল করেছি সব, এক্ষেত্রে আমার অপারগতাকে আমি দায়ী করব।"

কোন এক প্রেমিক পুরুষ লিখেছিল তার প্রেমিকাকে, অবশ্য ছেলেটির কাছে মেয়েটি তার প্রেমিকা। কিন্তু মেয়েটির কাছে? এখানেও একটা ম্যাটার কাজ করে যাচ্ছে নিত্য। হয়তবা অদূর ভবিষ্যতে !

আবেগ অনুভূতি আমার মতে একই রকম। আজ আমার যেমন লাগছে, আজ আমার মন যত খারাপ; আগামীকাল অন্য কারো একই রকম হতে পারে। পার্থক্য একটি ক্ষেত্রে- প্রকাশ! প্রকাশের ভিন্নতা আলাদা হলেও ভালোবাসা ভালবাসাই, বিরহ বিরই, কষ্ট কষ্টই!

রবীদ্রনাথের লেখা থেকে আরেকটু স্পষ্ট ভাবে কিছু সম্পর্ককে একটু ভিন্নতা আনা যায়। যেমন তিনি বলেছিলেন “বন্ধুত্ব ও ভালবাসায় অনেক তফাৎ আছে, কিন্তু ঝট্‌ করিয়া সে তফাৎ ধরা যায় না। বন্ধুত্ব আটপৌরে, ভালবাসা পোশাকী। বন্ধুত্বের আটপৌরে কাপড়ের দুই-এক জায়গায় ছেঁড়া থাকিলেও চলে, ঈষৎ ময়লা হইলেও হানি নাই, হাঁটুর নীচে না পৌঁছিলেও পরিতে বারণ নাই। গায়ে দিয়া আরাম পাইলেই হইল। কিন্তু ভালবাসার পোশাক একটু ছেঁড়া থাকিবে না, ময়লা হইবে না, পরিপাটি হইবে। বন্ধুত্ব নাড়াচাড়া টানাছেঁড়া তোলাপাড়া সয়, কিন্তু ভালবাসা তাহা সয় না। আমাদের ভালবাসার পাত্রহীন প্রমোদে লিপ্ত হইলে আমাদের প্রাণে বাজে, কিন্তু বন্ধুর সম্বন্ধে তাহা খাটে না; এমন-কি, আমরা যখন বিলাসপ্রমোদে মত্ত হইয়াছি তখন আমরা চাই যে, আমাদের বন্ধুও তাহাতে যোগ দিক! প্রেমের পাত্র আমাদের সৌন্দর্য্যের আদর্শ হইয়া থাক্‌ এই আমাদের ইচ্ছা—আর, বন্ধু আমাদেরই মত দোষে গুণে জড়িত মর্ত্ত্যের মানুষ হইয়া থাক্‌ এই আমাদের আবশ্যক। আমাদের ডান হাতে বাম হাতে বন্ধুত্ব। আমরা বন্ধুর নিকট হইতে মমতা চাই, সমবেদনা চাই, সাহায্য চাই ও সেই জন্যই বন্ধুকে চাই। কিন্তু ভালবাসার স্থলে আমরা সর্ব্বপ্রথমে ভালবাসার পাত্রকেই চাই ও তাহাকে সর্ব্বতোভাবে পাইতে চাই বলিয়াই তাহার নিকট হইতে মমতা চাই, সমবেদনা চাই, সঙ্গ চাই। কিছুই না পাই যদি, তবুও তাহাকে ভালবাসি। ভালবাসায় তাহাকেই আমি চাই, বন্ধুত্বে তাহার কিয়দংশ চাই। বন্ধুত্ব বলিতে তিনটি পদার্থ বুঝায়। দুই জন ব্যক্তি ও একটি জগৎ। অর্থাৎ দুই জনে সহযোগী হইয়া জগতের কাজ সম্পন্ন করা। আর, প্রেম বলিলে দুই জন ব্যক্তি মাত্র বুঝায়, আর জগৎ নাই। দুই জনেই দুই জনের জগৎ। অতএব বন্ধুত্ব অর্থে দুই এবং তিন, প্রেম অর্থে এক এবং দুই।

অনেকে বলিয়া থাকেন বন্ধুত্ব ক্রমশঃ পরিবর্ত্তিত হইয়া ভালবাসায় উপনীত হইতে পারে, কিন্তু ভালবাসা নামিয়া অবশেষে বন্ধুত্বে আসিয়া ঠেকিতে পারে না। একবার যাহাকে ভালবাসিয়াছি, হয় তাহাকে ভালবাসিব নয় ভালবাসিব না; কিন্তু একবার যাহার সঙ্গে বন্ধুত্ব হইয়াছে, ক্রমে তাহার সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্ক স্থাপিত হইতে আটক নাই। অর্থাৎ বন্ধুত্বের উঠিবার নামিবার স্থান আছে। কারণ, সে সমস্ত স্থান আটক করিয়া থাকে না। কিন্তু ভালবাসার উন্নতি অবনতির স্থান নাই। যখন সে থাকে তখন সে সমস্ত স্থান জুড়িয়া থাকে, নয় সে থাকে না। যখন সে দেখে তাহার অধিকার হ্রাস হইয়া আসিতেছে তখন সে বন্ধুত্বের ক্ষুদ্র স্থানটুকু অধিকার করিয়া থাকিতে চায় না। যে রাজা ছিল সে ফকির হইতে রাজি আছে, কিন্তু করদ জায়গীরদার হইয়া থাকিবে কিরূপে? হয় রাজত্ব নয় ফকিরী, ইহার মধ্যে তাহার দাঁড়াইবার স্থান নাই। ইহা ছাড়া আর একটা কথা আছে—প্রেম মন্দির ও বন্ধুত্ব বাসস্থান। মন্দির হইতে যখন দেবতা চলিয়া যায় তখন সে আর বাসস্থানের কাজে লাগিতে পারে না, কিন্তু বাসস্থানে দেবতা প্রতিষ্ঠা করা যায়। “ 

--------------------- সংক্ষিপ্ত

Warning advisory: ""Never believe in my eyes and stay away from my smile...""

অসহায়ত্ব

চেয়ে দেখা ছাড়া আমার কিচ্ছু করার নেই। টেনে আঁকড়ে রাখার ক্ষমতা নেই আমার। আমি অযত্নে গড়া মাতাল খারাপ ছেলেটা। আমি মিষ্টি মেয়ের রেখে যাওয়া সঠিক স...